বুধবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

আদিবাসী অধিকার বিষয়ক জাতিসংঘ ঘোষণাপত্র (Adibasi Odhikar bishoyok Jatisongher ghoshonapotro)


   আদিবাসী অধিকার বিষয়ক জাতিসংঘ ঘোষণাপত্র

                                                                                                (সংগৃহীত)

অংশদারিত্ব ও পারষ্পরিক শ্রদ্ধবোধের ভিত্তিতে অব্যাহত সফলতার ফলক হিসেবে নিমোক্ত আদিবাসী অধিকার বিষয়ক জাতিসংঘ ঘোষণাপত্রটি (৪৬টি অনুচ্ছেদে বিভক্ত )আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছে---

অনুচ্ছেদ - ১

জাতিসংঘ সনদ, সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা পত্র ৩ এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনসমূহে স্বীকৃত সকল প্রকার মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতা, সমষ্টিগতভাবে হোক, আদিবাসীদের পূর্ণাঙ্গভাবে উপভোগ করার অধিকার রয়েছে।

অনুচ্ছেদ-২

আদিবাসী জনগোষ্ঠী সমূহ অন্য সকল জনগোষ্ঠী ও ব্যক্তির মতোই  স্বাধীন ও সমান এবং তাদের অধিকার উপভোগ করার েেত্র, বিশেষ করে তাদের আদি উৎপত্তি অথবা পরিচয়ের ভিত্তিতে যেকোন বৈষম্য থেকে মুক্তি লাভের অধিকার রয়েছে।

অনুচ্ছেদ-৩

আদিবাসী জনগোষ্ঠীর আত্মনিয়ন্ত্রনের অধিকার রয়েছে। সেই অধিকার বলে তারা অবাধে তাদের রাজনৈতিক মর্যাদা নির্ধারণ করে এবং অবাধে তাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক কর্মপ্রয়াস অব্যাহত রাখে।

অনুচ্ছেদ-৪

আদিবাসী জনগোষ্ঠীর আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার উপভোগের বেলায়, তাদের আভ্যন্তরীণ ও স্থানীয় বিষয়ে তথা স্বশাসিত কার্যাবলীর অর্থায়নের পন্থা ও উৎস নির্ধারণের েেত্র তাদের স্বায়ত্ত্বশাসন বা স্বশাসিত সরকারের অধিকার রয়েছে।

অনুচ্ছেদ- ৫

আদিবাসী  জনগন যদি পছন্দ করে তাহলে রাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের পূর্ণ অধিকার রেখে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের স্বতন্ত্র রাজনৈতিক, আইনগত, অর্থনৈতিক , সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান অুন্ন রাখা ও শক্তিশালীকরণের অধিকার রয়েছে।

অনুচ্ছেদ-৬

আদিবাসী ব্যক্তির জাতীয়তা লাভের অধিকার রয়েছে।

অনুচ্ছেদ-৭

১.    আদিবাসী ব্যক্তির তার জীবন, শারীরিক এবং মানসিক মর্যাদা , স্বাধীনতা এবং ব্যক্তিগত নিরপত্তা লাভের অধিকার রয়েছে।

২.    আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের স্বতন্ত্র জনগোষ্ঠী হিসেবে স্বাধীনভাবে, শান্তিতে ও নিরাপদ ভাবে জীবন যাপনের অধিকার রয়েছে এবং জোরপূর্বক একগোষ্ঠীর শিশুদের অন্য কোন গোষ্ঠীতে সরিয়ে নেওয়াসহ    গণ হত্যা অথবা অন্য কোন প্রকার সহিংস কর্মকান্ডের শিকার করা যাবেনা।

অনুচ্ছেদ-৮

১.    আদিবাসী জনগোষ্ঠী ও ব্যক্তিকে জবরদস্তিমূলক ভাবে অন্য সম্প্রদায়ের সঙ্গে একীভুত করা বা তাদের সংস্কৃতি ধ্বংস করা যাবে না।

২.    রাষ্ট্র আদিবাসীদের বিরুদ্ধে নিুোক্ত কার্যক্রম নিবৃত্ত ও প্রতিকারের  জন্য কার্যকরী কর্মকৌশল গ্রহণ করবে।

(ক) তাদের স্বতন্ত্র জনগোষ্ঠীর মর্যাদা বা সাংস্কৃতিক মূলবোধ কিংবা আত্মপরিচয়কে বিপন্ন করার ল্েয অথবা প্রভাবিত করে এমন যে কোন কার্যক্রম;

(খ) তাদের ভূমি, ভূখন্ড অথবা সম্পদ থেকে বিতাড়িত করার ল্েয অথবা প্রভাবিত করে এমন যে কোন কার্যক্রম ;

(গ) তাদের অধিকার লঙ্গন ও ুন্ন করার ল্েয অথবা প্রভাবিত করে এমন যে কোন জবরদস্তিমূলক জনগোষ্ঠী স্থানান্তর কার্যক্রম;

(ঘ) যে কোন প্রকার একীভুতকরণ বা অঙ্গীভুতকরণ কার্যক্রম;

(ঙ) তাদের বিরুদ্ধে জাতিগত কিংবা নৃতাত্ত্বিক বৈষম্য ত্বরান্বিত করা বা উস্কে দেয়ার ল্েয পরিকল্পিত যে কোন অপপ্রচারণা।

অনুচ্ছেদ-৯

আদিবাসী জনগোষ্ঠী ও ব্যক্তির তাদের ঐতিহ্য ও প্রথা অনুসারে আধিবাসী সম্প্রদায় বা জাতির সদস্য হওয়ার অধিকার রয়েছে। এই অধিকার উপভোগ করার েেত্র কোন প্রকার বৈষম্য করা যাবে না।

অনুচ্ছেদ-১০

আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে তাদের ভূমি কিংবা ভূখন্ড থেকে জবরদস্তিমূলকভাবে উৎখাত করা যাবে না। আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে তাদের স্বাধীন ও পূর্ববহিত সম্মতি ছাড়া কোনভাবে অন্য এলাকায় স্থানান্তর করা যাবে না এবং ন্যায্য ও যথাযথ তিপূরণের বিনিময়ে সমঝোতা সাপেে স্থানান্তর করা হলেও, যদি কোন সুযোগ থাকে , পুনরায় তাদেরকে স্ব-এলাকায় ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা থাকতে হবে।

অনুচ্ছেদ- ১১

১.    আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও প্রথা চর্চা করা ও পুনরুজ্জীবিত করার অধিকার রয়েছে। এই অধিকারের মধ্যে তাদের সংস্কৃতির অতীত , বর্তমান , ভবিষ্যৎ অভিব্যক্তি , যেমন প্রতœতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক স্থান , শিল্পকলা , নকশা, অনুষ্ঠানাদি, প্রযুক্তি এবং সচিত্র ও অভিনয় শিল্প ও সাহিত্য অুন্ন রাখা, রা এবং উন্নয়ন করার অধিকার অন্তর্ভূক্ত থাকবে।

২.    রাষ্ট্র আদিবাসীদের সাথে যৌথভাবে প্রণীত কার্যকর কর্মকৌশল গ্রহণের মাধ্যমে, সাংস্কৃতিক , বুদ্ধিবৃত্তিক , ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক সম্পদ যা আদিবাসীদের স্বাধীন ও পূর্বাবহিত সম্মতি ব্যতীত কিংবা তাদের  আইন ,ঐতিহ্য ও প্রথা লঙ্গন করে কেড়ে নেওয়া হয়েছে সেগুলোকে সম্মানজনকভাবে পুনরুদ্ধারের েেত্র কার্যকর প্রতিবিধানের উদ্যোগ নেবে।

অনুচ্ছেদ- ১২

১.    আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্য , প্রথা ও উৎসব বিশ্বাস  করা , পালন করা , উন্নয়ন করা এবং শিা প্রদানের অধিকার ; তাদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক স্থানসমূহ অুন্ন রাখা, রা করা এবং একান্ত ভাবে চর্চার প্রবেশাধিকার ; উৎসব আচারাদিকার বস্তসামগ্রী ব্যবহার ও নিয়ন্ত্রণের অধিকার ; এবং তাদের পূর্ব পুরুষের দেহাবশেষ ফিরিয়ে পাওয়ার অধিকার রয়েছে।

২.    রাষ্ট্র সংশ্লিষ্ট আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাথে যৌথভাবে প্রণীত ন্যায়সঙ্গত , স্বচ্ছ ও কার্যকর কর্মকৌশলের মাধ্যমে উৎসব আচারাদির বস্তসামগ্রী লাভ করা এবং / কিংবা দেহাবশেষ ফিরিয়ে পাওয়ার েেত্র উদ্যোগ গ্রহণ করবে।

 অনুচ্ছেদ-১৩

১.    আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের ইতিহাস, ভাষা, অলিখিত প্রথা, দর্শন, লিখিত পদ্ধতি ও সাহিত্য পুনরুজ্জীবিত করা, ব্যবহার করা, উন্নয়ন করা ও ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে হস্থান্তর করা  এবং জনগোষ্ঠী, স্থান ও ব্যক্তির নিজস্ব নামকরণ করা ও তা বহাল রাখার অধিকার রয়েছে।

২.    আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকার যাতে রতি হয় তা নিশ্চিত করার জন্য এবং আদিবাসীরা বুঝতে পারে ও বুঝতে সম হবে এমন রাজনৈতিক, আইনগত ও প্রশাসনিক কার্যপ্রণালী, প্রয়োজনে অনুবাদের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্র কার্যকরী পদপে গ্রহণ করবে।

অনুচ্ছেদ-১৪

১.    আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের নিজস্ব ভাষায় শিা প্রদানের জন্য তাদের সাংস্কৃতিক রীতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ পাঠদান ও শিা পদ্ধতি অনুসারে শিাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন এবং সে সবের উপর তাদের নিয়ন্ত্রণের অধিকার রয়েছে।

২.    আদিবাসী ব্যক্তির , বিশেষ করে আদিবাসী শিশুদের , বৈষম্যহীনভাবে রাষ্ট্র প্রদত্ত সকল স্তরের ও সকল প্রকারের শিা লাভের অধিকার রয়েছে।

৩.    রাষ্ট্র, আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাথে যৌথভাবে , যারা তাদের সম্প্রদায়ের বাইওে বসবাস করছে তাদেরসহ আদিবাসী মানুষের , বিশেষ করে শিশুদের জন্য সম্ভব েেত্র , নিজস্ব সংস্কৃতি ও ভাষায় শিা লাভের সুযোগ সৃষ্টির কার্যকর পদপে গ্রহণ করতে হবে।

অনুচ্ছেদ-১৫

১.    আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের মর্যাদাপূর্ণ ও বৈচিত্রপূণর্ সংস্কৃতি , ঐতিহ্য , ইতিহাস ও আশা -আকাঙা ধারণের অধিকার রয়েছে যা শিাব্যবস্থায় ও রাষ্ট্রীয় তথ্যভান্ডারে যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়।  

২.    রাষ্ট্র আদিবাসী জনগোষ্ঠী এবং সমাজের অন্য সকল অংশের মধ্যে বিদ্বেষ প্রশমন করা ও বৈষম্য দূরী করা এবং সহনশীলতা, সমঝোতা ও সুসম্পর্ক ত্বরান্বিত করার জন্য সংশিষ্ট আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাথে আলোচনাক্রমে ও যৌথভাবে কার্যকর পদপে গ্রহণ করবে।

অনুচ্ছেদ-১৬

১.    আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের নিজস্ব  গণ মাধ্যম প্রতিষ্ঠা করার অধিকার এবং কোনরূপ বৈষম্য ব্যতীত  অ- আদিবাসী জনগোষ্ঠী কর্তৃক পরিচালিত সকল প্রকার গণ মাধ্যমে প্রবেশাধিকার রয়েছে।

২.    রাষ্ট্র রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন গণ মাধ্যমে আদিবাসীদের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র যাতে যথাযথ প্রতিফলিত হয় তা নিশ্চিত করতে কার্যকর পদপে গ্রহণ করবে। কোনরূপ বাধা ব্যতীত মত প্রকাশের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণে, আদিবাসীদের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র পর্যাপ্তভাবে প্রতিফলন ঘটানোর জন্য রাষ্ট্র বেসরকারী মালিকানাধীন গণ মাধ্যমগুলোকে উৎসাহিত করবে।

অনুচ্ছেদ-১৭

১.    আদিবাসী ব্যক্তি ও জনগোষ্ঠীর বিদ্যমান আন্তর্জাতিক ও দেশীয় শ্রম আইনে স্বীকৃত সকল প্রকার অধিকার পূর্ণাঙ্গ ভাবে উপভোগ করার অধিকার রয়েছে।

২.    রাষ্ট্র আধিবাসী শিশুদের মতায়নের নিমিত্তে তাদেও শিার প্রয়োজনীয়তা ও গুরূত্বকে বিবেচনা করে তাদেরকে অর্থনৈতিক শোষণ থেকে এবং তাদেও শিায় অনিশ্চিত কিংবা বাধাগ্রস্ত করে অথবা শিশুদের স্বাস্থ্য বা দৈহিক , মানসিক, আধ্যাত্মিক ,নৈতিক  বা সামাজিক অগ্রগতিকে তিগ্রস্ত করে এমন যে কোন ঝুঁকিপূর্ণ কাজ থেকে রার জন্য আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাথে আলোচনাক্রমে ও যৌথভাবে বিশেষ পদপে গ্রহণ করবে।

৩.    আদিবাসী ব্যক্তিকে কাজ এবং যেমন, চাকরী বা বেতন - ভাতার েেত্র কোন বৈষম্যমূলক শর্তারোপ করা যাবে না।

অনুচ্ছেদ-১৮

আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের নিজস্ব কর্মপদ্ধতিতে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে, তাদের অধিকারকে প্রভাবিত করবে এমন বিষয়ে , তথা তাদের নিজস্ব আদিবাসী সিদ্ধান্ত - নির্ধারণী প্রতিষ্ঠান অুন্ন রাখা ও উন্নয়নের জন্য , সিদ্ধান্ত নির্ধারণী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের অধিকার রয়েছে।

অনুচ্ছেদ-১৯

রাষ্ট্র  আদিবাসীদের প্রভাবিত করতে পারে এমন আইন প্রনয়ন কিংবা প্রশাসনিক সংক্রান্ত পদপে  গ্রহণ ও বাস্তবায়নের পূর্বে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর স্বাধীন ও পূর্বাবহিত সম্মতি নেয়ার জন্য তাদের প্রতিনিধিত্বশীল প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাথে আন্তরিকত্ব সদিচ্ছার সাথে আলোচনা ও সহযোগিতা করবে।

অনুচ্ছেদ-২০

১.আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের জীবন- জীবিকা ও উন্নয়নের নিজস্ব ধারা নিশ্চিত করার জন্য এবং তাদের ঐতিহ্যগত ও অন্যান্য অর্থনৈতিক কার্যক্রমে স্বাধীনভাবে নিযুক্ত থাকার জন্য তাদের রাজনৈতিক ,অর্থনৈতিক ও সামাজিক ব্যবস্থা বা প্রতিস্থান বজায় রাখা ও উন্নয়নের অধিকার রয়েছে।

২.আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের জীবন- জীবিকা ও উন্নয়নের েেত্র যে বঞ্চনার শিকার হয়েছে তার ন্যায্য ও নিরপে প্রতিকার পাওয়ার তাদের অদিকার রয়েছে।

অনুচ্ছেদ-২১

১.    আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদেও অর্থনৈতিক ও  সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন তথা শিা , কর্মসংস্থান , কারিগরি প্রশিণ ও পৌন প্রশিণ , আবাসন, স্যানিটেশন , স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তা লাভের অধিকার রয়েছে।

২.    রাষ্ট্র আদিবাসদের অর্থনৈতিক ও  সামাজিক অবস্থার অব্যাহত উন্নতির নিশ্চয়তা বিধানের জন্য কার্যকরী পদপে এবং প্রয়োজন েেত্র বিশেষ পদপে গ্রহণ করবে। আদিবাসী প্রবীন , যুবক - যুবতী , শিশু ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অদিকার ও প্রয়োজনীয়তার প্রতি সবিশেষ মনোযোগ দিতে হবে।

অনুচ্ছেদ-২২

১.    এই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নের সময় আদিবাসী প্রবীণ, যুবক- যুবতী , শিশু ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অদিকার ও প্রয়োজনীয়তার প্রতি সবিশেষ মনোযোগ দিতে হবে।

২.    রাষ্ট্র আদিবাসী নারী ও শিশুরা যাতে সকল প্রকার সহিংসতা ও বৈষম্য থেকে রা পায় ও তা নিশ্চয়তার সাথে পরিপূর্ণভাবে উপভোগ করে তার নিশ্চিত করার জন্য , আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাথে যৌথভাবে , পদপে গ্রহণ করবে।

অনুচ্ছেদ-২৩

আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের উন্নয়নের অধিকার প্রয়োগের জন্য অগ্রাধিকার বিষয় ও কর্মকৌশলের নির্ধারণ ও প্রনয়নের অধিকার রয়েছে।আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বিশেষ করে স্বাস্থ্য , আবাসন এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক কর্মকান্ড যা তাদেরকে প্রভাবিত করে এগুলোর উন্নয়ন ও নির্ধারণের জন্য এবং যতাসম্ভব তাদেও নিজস্ব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এসব কর্মকান্ড পরিচালনা করার জন্য সক্রিয়ভাবে জড়িত হওয়ার অধিকার রয়েছে।  

অনুচ্ছেদ-২৪

১.    আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদেও ঐতিহ্য ঔষধি ব্যবস্থাপনা এবং অত্যাবশক ঔষধি গাছ , জীবজন্তু ও খনিজ সম্পদ সংরণসহ তাদের স্বস্থ্য পরিচর্যার অধিকার রয়েছে। আদিবাসী জনগোষ্ঠীর কোন বৈষম্য ছাড়া সকল প্রকার সামাজিক ও স্বাস্থ্য সেবা লাভের অধিকার রয়েছে।

২.    আদিবাসী ব্যক্তির তাদের প্রাপ্য সর্বোচ্চ মানের দৈহিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সেবা উপভোগের অধিকার রয়েছে। রাষ্ট্র এই অধিকার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের েেত্র ক্রমাগত অগ্রগতির ল্েয পদপে গ্রহণ করবে।

 

অনুচ্ছেদ-২৫

আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের ঐতিহ্য গতভাবে মালিকানাধীন কিংবা অন্যথায় দখলয়ী ও ব্যবহার্য জমি, ভূখন্ড, জল, সমুদ্র উপকূল ও অন্যান্য সম্পদের সাথে তাদের স্বাতন্ত্র্য আধ্যাত্মিক সম্পর্ক রাখা ও সুদৃঢ়করণের অধিকার এবং এ ক্ষেত্রে ভবিষ্যত প্রজন্মেও নিকট তাদের এসবের দায়িত্বসমূহ সমুন্নত রাখার অধিকার রয়েছে।

 

অনুচ্ছেদ-২৬

১.    আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের ঐতিহ্যগতভাবে মালিকানাধীন, দখলীয় কিংবা অন্যথায় ব্যবহার্য কিংবা অধিগ্রহণকৃত জমি, ভূখন্ড ও সম্পদের অধিকার রয়েছে।

২.    জমি, ভূখন্ড ও সম্পদের উপর যা আদিবাসীরা ঐতিহ্যগত মালিকানা কিংবা ঐতিহ্যগত ভোগদখল, ব্যবহার, বা অন্যথায় অধিগ্রণের মাধ্যমে অর্জন করে এসবের উপর আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মালিকানা, ব্যবহার উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণের অধিকার রয়েছে।

৩.    রাষ্ট্র এসব জমি, ভূখন্ড ও সম্পদের আইনগত স্বীকৃতি ও রার বিধান প্রদার করবে। সংল্লিষ্ট আদিবাসী জনগোষ্ঠীর প্রথা, ঐতিহ্য এবং ভূমি মালিকানা ব্যবস্থাপনা মেনে সেই স্বীকৃতি প্রদান করবে।

 

অনুচ্ছেদ-২৭

রাষ্ট্র সংশ্লিষ্ট  আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাথে যৌাথভাবে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর আইন, ঐতিহ্য, প্রথা ও ভূমি মালিকানাধীন ব্যবস্থাপনার যথাযথ স্বীকৃতি প্রদান করে, ঐতিহ্যগত ভাবে মালিকানাধীন কিংবা অন্যথায় দখলীয় বা ব্যবহার্য তাদের ভূমি, ভূখন্ড ও সম্পদেও উপর গুরুত্ব প্রদান করে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকার স্বীকৃতি দেয়া ও নির্ণয় করার ল্েয একটি অবাধ, স্বাধীন, নিরপে, উন্মুক্ত ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়া প্রবর্তন ও বাস্তবায়ন করবে। এই প্রক্রিয়ায় আদবাসী জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণের অধিকার রয়েছে।  

 

অনুচ্ছেদ-২৮

১.    আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভূমি, ভূখন্ড ও সম্পদ যা তাদের ঐতিহ্যগতভাবে মালিকানাধীন কিংবা অন্যথায় দখলকৃত বা ব্যবহারকৃত, এবং তাদের স্বাধীন ও পূর্বাবহিত সম্মতি ছাড়া বেদখল, ছিনতাই, দখল বা তিসাধন করা হয়েছে এসব যাতে ফিরে পায় কিংবা, তা সম্ভব না হলে, একটা ন্যায্য, যথাযথ ও উপযুক্ত তিপূরণ পায় তার প্রতিকার পাওয়ার আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকার রয়েছে।

২.    সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠী স্বেচ্ছায় অন্য কোন কিছু রাজী না হলে তিপূরণ হিসেবে গুণগত, পরিমানগত ও আইনি মর্যাদা  দিক দিয়ে সমান ভূমি, ভূখন্ড ও সম্পদ অথবা সমান আর্থিক তিপূরণ দিতে হবে বা অন্য কোন যথাযথ প্রতিকার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

 

অনুচ্ছেদ-২৯

১.    আদিবাসী জনগোষ্ঠীর পরিবেশ এবং তাদের ভূমি বা ভূখন্ড ও সম্পদেও উৎপাদন সমতা সংরণ ও রা করার অধিকার রয়েছে। রাষ্ট্র কোন বৈষম্য ছাড়া এ ধরনের সংরণ ও রা করার ক্ষেত্রে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য সহায়তামূলক কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করবে।

২.    রাষ্ট্র আদিবাসিদের ভূমি বা ভূখেন্ড কোন প্রকার ঝুঁকিপূর্ণ দ্রব্যসামগ্রী গুদামজাতকরণ বা এর আবর্জনা স্তুপীকরণ যাতে না হয় তা নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

৩.    রাষ্ট্র আদিবাসীদেও স্বাস্থ্যসেবা পরিবীণ, দেখাশুনা এবং পুনরুদ্ধার সংক্রান্ত কার্যক্রম যা উল্লেখিত দ্রব্যসামগ্রী দ্বারা প্রণীত ও কার্যকর হবে তা যাতে যথাযথ ভাবে বাস্তবায়িত হয়, প্রয়োজনানুসারে সেটা নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

 

অনুচ্ছেদ-৩০

১.    আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভূমি কিংবা ভূখন্ডে সামরিক কার্যক্রম হাতে নেয়া যাবে না, যতণ না পর্যন্ত উপযুক্ত রাষ্ট্রীয় স্বার্থের/ জনস্বার্থের ( প্রয়োজনে যুক্তিগ্রাহ্য হবে অথবা অন্যদিকে যদি সংশ্লিষ্ট আদিবাসী জনগোষ্ঠীর স্বেচ্ছায় সম্মতি জ্ঞাপন বা অনুরোধ করে।

২.    রাষ্ট্র সামরিক কার্যক্রমের জন্য আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভূমি বা ভূখন্ড ব্যবহারের পূর্বে যথাযথ পদ্ধতি ও বিশেষ করে তাদের প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাথে কার্যকর আলোচনার উদ্যোগ গ্রহণ করবে।

 

অনুচ্ছেদ-৩১

১.    আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের সাংস্কৃতিক কৃষ্টি, ঐতিহ্যগত জ্ঞান এবং ঐতিহ্যগত সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তি, তথা মানব ও বংশ উৎপত্তি বিষয়ক সম্পদ, বীজ, ঔষধ, প্রাণী ও উদ্ভিদ বিষয়ক সম্পদ, মৌখিক ঐতিহ্য, সাহিত্য, নকশা, ক্রীড়া ও ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা এবং সচিত্র ও অভিনয় কলাসহ তাদের বিজ্ঞান প্রযুক্তি এবং সংস্কৃতির প্রদর্শনের চর্চা, নিয়ন্ত্রণ, সংরণ এবং উন্নয়নের অধিকার রয়েছে। সাংস্কৃতিক কৃষ্টি, ঐতিহ্যগত জ্ঞান এবং ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তিসহ তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ বজায় রাখা, নিয়ন্ত্রণ, রা এবং উন্নয়নের অধিকার ও তাদের রয়েছে।

২.    রাষ্ট্র আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাথে যৌথভাবে এ সকল অধিকারগুলোর স্বীকৃতি ও সংরণে কার্যকর পদপে গ্রহণ করবে।

 

অনুচ্ছেদ-৩২

১.    আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের ভূমি কিংবা ভূখন্ড ও অন্যান্য সম্পদের উন্নয়নের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার বিষয় ও কর্মকৌশল নির্ধারণ ও প্রনয়ণের অধিকার রয়েছে।

২.    রাষ্ট্র আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভূমি, ভূখন্ড ও সম্পদের উপর প্রভাব বিস্তার করে এমন কোন প্রকল্প অনুমোদনের পূর্বে, বিশেষ করে তাদের খনিজ, জল কিংবা অন্য কোন সম্পদের উন্নয়ন, ব্যবহার বা আহোরণের পূর্বে স্বাধীন ও পূর্বাবহিত সম্মতি গ্রহণের জন্য তাদের নিজস্ব প্রতিনিধিত্বশীল প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাথে আলোচনা ও সহযোগিতা করবে।

৩.     রাষ্ট্র উক্তরূপ কোন কার্যক্রমের ন্যায্য ও যথাযথ প্রতিকারের জন্য কার্যকর কর্মকৌশল গ্রহণ করবে এবং মারাত্মক পরিবেশগত, অর্থনৈতিক, সামাজিক অথবা আধ্যাত্মিক প্রভাব কমানোর জন্য যথাযথ পদপে গ্রহণ করবে।

 

অনুচ্ছেদ-৩৩

১.    আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের নিজস্ব প্রথা এবং ঐতিহ্য মোতাবেক তাদের আত্মপরিচয়  অথবা সদস্যপদ নির্ধারণের অধিকার রয়েছে। এই অধিকার যে রাষ্ট্রে বাস করে সেই রাষ্ট্রর নাগরিকত্ব লাভ থেকে আদিবাসী ব্যক্তিদেরকে নিবৃত্ত করবে না।

২.    আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের নিজস্ব পদ্ধতি অনুযায়ী তাদের প্রতিষ্ঠানের কাঠামো নির্ধারণ ও সদস্য পদ মনোনয়নের অধিকার রয়েছে।

 

অনুচ্ছেদ-৩৪

আদিবাসী জনগোষ্ঠীর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মান অনুসারে তাদের নিজস্ব প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো ও তাদের স্বতন্ত্র প্রথা, আধ্যাত্মিকতা, ঐতিহ্য, কার্যপদ্ধতি, অভ্যাস এবং যে রাষ্ট্রে তাদের বাস রয়েছে উক্ত রাষ্ট্রের বিচার ব্যবস্থা কিংবা ঐতিহ্যের প্রসার ঘটানো, উন্নয়ন করা ও বজায় রাখার অধিকার রয়েছে।

অনুচ্ছেদ-৩৫
আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তাদের সমাজে ব্যক্তির দায়িত্বাবলী নির্ধারণের অদিকার রয়েছে।


অনুচ্ছেদ-৩৬

১.    আদিবাসী জনগোষ্ঠীর, বিশেষত্বঃ যারা আন্তর্জাতিক সীমানা দ্বারা বিভক্ত হয়েছে তারা অন্য প্রান্তের নিজস্ব জনগোষ্ঠী তথা অন্যান্য জনগোষ্ঠীর সঙ্গে আধ্যাত্মিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক সংক্রান্ত কার্যক্রমসহ যোগাযোগ, সম্পর্ক ও সহযোগিতা বজায় রাখার ও উন্নয়নের অধিকার রয়েছে।

২.    রাষ্ট্র এই অধিকার কার্যকরকরণে সহযোগিতা প্রদান ও বাস্তবায়ন নিশ্চিতকরণের জন্য আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাথে আলোচনা ও সহযোগিতার ভিত্তিতে কার্যকর পদপে গ্রহণ করবে।

 

অনুচ্ছেদ-৩৭

১.    আদিবাসী জনগোষ্ঠীর রাষ্ট্র কিংবা তাদের উত্তরসূরী  চুক্তি, সমঝোতা স্মারক এবং অন্যান্য গঠনমূলক ব্যবস্থাবলীর (constructive arrangement)  স্বীকৃতি, প্রতিপালন এবং বাস্তবায়ন করার অধিকার রয়েছে এবং এসব চুক্তি, সমঝোতা স্মারক ও গঠনমূলক ব্যবস্থাবলীর অবশ্যই রাষ্ট্রীয় মর্যাদা লাভের অধিকার রয়েছে।

২.    চুক্তি সমঝোতা স্মারক ও অন্যান্য গঠনমূলক ব্যবস্থায় সন্নিবেশিত আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকারগুলোকে খর্ব ও বিলুপ্ত করার জন্য এই ঘোষণাপত্রের কোন কিছুরই ব্যাখ্যা করা যাবে না।

অনুচ্ছেদ-৩৮

রাষ্ট্র এই ঘোষণাপত্রের চূড়ান্ত ল্য অর্জনের জন্য আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাতে আলোচনাক্রমে ও সহযোগে আইন প্রনয়ণসহ যথাযথ পদপে গ্রহণ করবে।

অনুচ্ছেদ-৩৯

আদিবাসী জনগোষ্ঠীর এই ঘোষণাপত্রে সন্নিবেশিত অধিকারগুলো উপভোগের জন্য রাষ্ট্র থেকে ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে অর্থনৈতিক ও কারিগরি সাহায্য লাভের অধিকার রয়েছে।
 
অনুচ্ছেদ-৪০

আদবাসী জনগোষ্ঠীর রাষ্ট্ররা অন্যান্য পরে সাথে বিদ্যমান সংঘাত ও বিরোধ নিষ্পত্তি, তথা তাদের ব্যক্তিগত ও সমষ্টিতগত অধিকারের উপর হস্তেেপর কার্যকর প্রতিকারের জন্য ন্যায্য ও নিরপে পদ্ধতি গ্রহণ করা এবং তার মাধ্যমে দ্রুত মীমাংসা লাভের অধিকার রয়েছে। এরূপ মীমাংসার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আদিবাসী জনগোষ্ঠীর প্রথা, ঐতিহ্য, নিয়মনীতি ও আইনি ব্যবস্থা এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকারকে যথাযথ বিবেচনায় রাখতে হবে।
 
অনুচ্ছেদ-৪১

জাতিসংঘের বিভিন্ন বিভাগ ও বিশেষায়িত সংস্থাসমূহ এবং অন্যান্য আন্তঃরাষ্ট্রীয় সংস্থাসমূহ অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহযোগিতাসহ কর্মোদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে এই ঘোষণাপত্রের বিধানবলী পূুর্ণ কার্যরূপদানে ভূমিকা রাখবে। আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে প্রভাবিত করে এমন সব বিষয়ে তাদেও নিশ্চিত অংশগ্রহনের জন্য পথ ও পন্থা গড়ে তুলতে হবে।
 
অনুচ্ছেদ-৪২

জাতিসংঘ, আদিবাসী বিষয়ক স্থায়ী ফোরামসহ জাতিসংঘের বিভিন্ন পরিষদ, জাতিসংঘের বিশ্ষোয়িত সংস্থাসমূহ, তাদের দেশীয় পর্যায়ের অফিসসহ, ও রাষ্ট্র এই ঘোষণাপত্রের বিধানাবলীর পূর্ণাঙ্গ প্রয়োগ ও স্বীকৃতি প্রদান করবে এবং এই ঘোষণাপত্রের কার্যকরণের অনুগ্রামী কর্মসূচি গ্রহণ করবে।

অনুচ্ছেদ-৪৩

এই ঘোষণাপত্রে স্বীকৃতি অধিকারগুলো বিশ্বের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অস্তিত্ব  রক্ষা, মর্যাদা ও সমৃদ্ধিও জন্য ন্যূনতম মান গঠন/ প্রদর্শন করে।

অনুচ্ছেদ-৪৪

এই ঘোষণাপত্রে স্বীকৃতি সকল অধিকার ও স্বাধীনতা আদিবাসী ব্যক্তির নারী ও পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রে সমান ভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে।

 

অনুচ্ছেদ-৪৫

এই ঘোষণাপত্রের কোন কিছুরই আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বিদ্যমান ও ভবিষ্যতে অর্জিত কোন অধিকার হ্রাসকরণ ও বিলুপ্তকরণ হিসেবে ব্যাখ্যা প্রদান করা যাবে না।

 

অনুচ্ছেদ-৪৬

১.এই ঘোষণাপত্রের কোন কিছুরই ব্যাখ্যা প্রদান করা যাবে না যা অর্থ দাঁড়ায় যে, জাতিসংঘ সনদের বিরোধাত্মক কোন তৎপরতায় প্রবৃত্ত হওয়া বা কোন কার্য সম্পাদন করার অদিকার কোন রাষ্ট্র, জনগোষ্ঠী, গোষ্ঠী বা ব্যক্তির রয়েছে অথবা সার্বভৌম ও স্বাধীন রাষ্ট্রের ভৌগোলিক অখন্ডতা বা রাজনৈতিক ঐক্যের, সম্পূর্ণ বা অংশবিশেষ, অঙ্গচ্ছেদ বা তি করবে এমন কোন কার্যের অধিকার রয়েছে।

২.এই ঘোষণাপত্রে ঘোষিত অধিকারগুলো উপভোগের ক্ষেত্রে, সকলের মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হবে। এই ঘোষণাপত্রে অন্তর্ভুক্ত অধিকারগুলো উপভোগের ক্ষেত্রে কেবল আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের দায়বদ্ধতা অনুসারে আইন দ্বারা নির্ধারিত সে সব সীমাবদ্ধতাগুলো কার্যকর হবে। এসব সীমাবদ্ধতা গুলো অন্যদের অধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার যথাযথ স্বীকৃতি প্রদানে ও সম্মান প্রদর্শনে নিশ্চয়তা বিধানের উদ্দেশ্যে এবং গণতান্ত্রিক সমাজের ন্যায্য ও অতীব বাধ্যবাধক প্রয়োজনীয়তা পুরিপূরণের জন্য একমাত্র অপ্রভেদমূলক ও কঠোর আবশ্যকতার ক্ষেত্রে বলবৎ হবে।

৩.    এই ঘোষণাপত্রে অন্তর্ভুক্ত বিধানাবলী ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র, মানবাধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন সমতা, বৈষম্যহীনতা, সুশাসন এবং আন্তরিক সদিচ্ছার (good faith) মূলনীতি অনুসারে ব্যাখ্যা করা যাবে।


সমাপ্ত

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন