শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

অনামিকার বিয়ে StorY


অনামিকার বিয়ে
.
ফিডেল ডি সাংমা
(মিতা- গল্পগ্রন্থথেকে)


সুবিরের বিয়ের বয়স হয়ে গেছে বেশ আগেই। ইন্টারমিডিয়েট পড়ার সময় কত বন্ধু বান্ধবীরা রঙ-ঢঙ, আড্ডা-টাড্ডা মারল, ওটাই নাকি প্রেম। কিন্তু সুবির পারল না। বন্ধুরা প্রায়ই খোঁচা মেরে কথা বলত, 'সুবির তুই কেমন পুরুষরে- ক্ষ্যাত একটা! মেয়েদের সায়া-ব্লাউজ চেয়ে পড়ে ঐখানে চুপ মেরে বসে থাকগে, যা। কাপুরুষ একটা। তোর পিছে ঘুর-ঘুর করে শেষ পর্যন্ত না পেয়ে সীমা তোফাজ্জলকে বিয়ে করল....'- তাতে আমার কি দোষ!- শুধু তোর জন্য...- চাপা মারিস্‌ না- চাপা বলে কথাটা উড়িয়ে দিতে চাস্‌? একটা মেয়ে আর কতকাল তোর পিছে ঘুরতে পারে বলত?- আমি আর কি করতে পারতাম বল...- এজন্য তোকেই দায় নেওয়া উচিত। আজ সত্যি করে বল সীমাকে তুই ভালবাসতিস না?


খুব গোপনে একটা দীর্ঘ-শ্বাস ছেড়ে সুবির বলে, 'এসব কথা এখন থাক...। 'সীমা দেখতে শুনতে মন্দ ছিল না। গায়ের রংটা শ্যামলা, মাঝারি গড়ন। কথা-বার্তায় চট-পটে, একেবারে আধুনিকা মেয়ে। প্রায় পাগলের মত ভালবাসত সুবিরকে। ভেতরে ভেতরে তারও সীমাকে অসম্ভব ভাল লেগে গিয়েছিল। কিন্তু তার অভাবের সংসারে এই আধুনিকা মেয়ের চাহিদা পূরণ করতে না পারার ভয় পেয়ে বসেছিল, তাই সেদিন তার ভালবাসার কথা প্রকাশ করতে পারেনি সে। অনেক আদিবাসি ছেলের প্রস্তাবে রাজি না হয়ে একদিন সীমা বলেছিল, 'তোকে না পেলে, আমি এ জীবনে আর বিয়েই করব না'।. কিন্তু এই কথা সে রাখতে পারেনি। কোন আদিবাসি ছেলেকে বিয়ে করলে সুবির খুশিই হত...।. থাক, যা হবার হয়েছে; তার খুশি-অখুশিতে কারোর কিছু আসবে যাবে না। বিষয়টাকে নিয়ে আর কিছু ভাবতে চায় না সে।কোন রকমে চলা আদিবাসি পরিবারে সুবির আর ছোট দুই ভাই-বোনের জন্ম। একেবারে না খেয়ে থাকতে হয়নি, তবে পড়া-শুনা, পোষাক-আষাক আর শখের বাসনাগুলো মেটাতে বাবার প্রাণান্ত চেষ্টা দেখতে দেখতে সুবির ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল। বছরের পর বছর মাকে দুটি শাড়ীর বেশী পড়তে দেখেনি, বাবাও তাই। খোলা বাজারের পোষাক দিয়ে চালিয়েছে শৈশব-কৈশর বেলা। ম্যাট্রিক পরীক্ষার সময় মা তার একটা ছাগল বিμি করে পেন্ট-শার্ট বানিয়ে দিয়েছিলেন আর বাবা দিলেন জুতো কেনার টাকা।সুবিরের মনে পড়ে তৃতীয় শ্রেণীতে যখন ভাল রেজাল্ট করল, তখন মা বললেন- কি ভাল করেছিস বাবা?- মা আমি প্রথম হইছি- প্রথম মানেতো পয়লা। এইডা বলার কি আছে, ইস্কুলের লাইনে খাড়াইলেতো তোরে ছোট বইলা সামনেই রাখতো...- মা তুমি বুঝনাই, মানে আমি পরীক্ষা লেইখ্যা এখন আমার রোল নম্বর এক হইছে, বুঝছ?- বাবারে তুমি একবার কইছিলা, তোমার কেলাশে বত্রিশ জন ছাত্র পড়। আইজ যদি তোমার রোল নম্বর বত্রিশ হইত, তাইলে আমি খুশি হইতাম। তা না; হইছ অ্যাক্‌।লেখাপড়া না জানা সহজ সরল মাকে বুঝাতে না পেরে সুবির মন খারাপ করেছিল। কিন্তু সেদিন ওয়ার্ল্ড ভিশনের কর্মী বয়স্ক সাক্ষরতার জন্য সদস্য খুঁজতে এসে ছেলের পাশের বিষয়টা বুঝিয়ে বললে সবাইকে মুরগী মেরে খাওয়ালেন। বাবাতো অবাক! পরের দিন বাজারে ওটা বিμি করার কথা ছিল।- তাইলে তুমি শিক্ষা দলে ভর্তি হইবা?- হ, পোলাডার বিষয়ডা বুঝতে না পাইরা আমি বড় লইজ্জা পাইছি।- না, কইছিলাম কি আমি..- কওনা কি তুমি কি?- আমিও তো আমার নাম লেখাইয়া আইলাম- কি কইলা? তুমিও পড়বা?- হ, আমার শরম করতাছে।- শিক্ষা নেওয়ায় শরমের কিছু নাই; মূর্খ থাকাডাই শরম- ও সুবিরের মা, তুমি তো দেহি আইজ জ্ঞানীর মত কথা বলতাছ- হ, ওয়ার্ল্ড ভিশনের দিদি আমাকে শিখাইয়া রাইখা গেছে। এখন বুঝছি ওই দিদির কথাই ঠিক...।


মা-বাবা এখন বুঝেন পড়ালেখা জানার মূল্য কত! তাইতো অনেক কষ্ট করে তাকে আর ছোট ভাই-বোনকে লেখাপড়া করালেন। তা না হলে আজ হয়তবা অফিসের এই বড় চেয়ারটায় বসা হত না। তবে যুবক-তরুণদের মত এ জীবনে তার প্রেম করা হল না। তার আশা- বিয়ের পরই নাহয় প্রেম করা যাবে। তখন থাকবে না কোন বাঁধা, না কোন ভয়, না কোন দ্বিধা-সংকোচ। সেদিনের অপেক্ষায় আছে যেদিন তার জীবন-সংসার সাগরে ভাসবে প্রেমের তরী....।


আজ অফিসে সপ্তাহের প্রথম দিন। সুযোগ মত বড় কর্মকতা অফিসে আসেন মাসে একবার কি দু'বার; আজও আসার কথা। তিনি আসলে ছুটি নিয়ে নিবে দরখাস্ত্মটা লিখে রাখবে। হাতে কত কাজ পড়ে আছে। বন্ধু বান্ধবদের সবাইকে খবর দেওয়া হয়নি। বাবা-মা বিয়ের জন্য চাপা-চাপি করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। তাই এই বিয়েতে মত দেওয়ায় তারা খুব খুশি। অনেকদিন আগেথেকেই ছুটি নিতে বলেছিলেন; কিন্তু কাজের চাপে নেওয়া হল না। ছোট বোনকে বিয়ে দেয়ার পর বাড়ির সব কাজ যেমন সুচারূ রূপে করে রাখে তেমনি এই বিয়ের ব্যাপারেও সেই মহা উৎসাহ নিয়ে দায়িত্ব পালন করছে। একদিন কোথাও দেখে অথবা শুনে এসে ছোট বোন বলেছিল, 'দাদা, একটা কথা বলি?- হ্যাঁ বল- আগে বল রাগ না করে ভেবে চিন্তে কথার উত্তর দিবে...- আচ্ছা- তুইই আগে বল, আমি কি খুব বেশী তোদের রাগ করি?- কথা ঘুড়িও না, অনুমতি যদি দাও তো বলি...- অভয় দিলাম। এবার বল...- দাদা, তোমার অনেক বয়স হয়েছে। অনেক কষ্ট করে আমাদের দুই ভাই-বোনের জন্য, এই সংসারের জন্য অনেক কিছু করলি। কিন্তু নিজের জন্য একবারও ভাবলে না...- নিমা, তুই বেশী সময় নিয়ে ফেলছিস্‌। ভনিতা না করে তাড়াতাড়ি বল। আমার অফিসের ম্যালা কাজ পড়ে আছে।- কথায় বাঁধা দিও না দাদা। আমাদের জন্য তুমি অনেক করেছ, আজ তোমার জন্য আমাদের কিছু করতে দাও
- ঠিক আছে দাও, কলের পাড়ে অনেকগুলো কাপড় ভিজিয়ে রেখেছি, আপাতত এখন ওগুলো ধুয়ে দিলেই চলবে- তোমার সেবা করার জন্যই ব্যবস্থা করতে চাইছি।- কি বলছিস্‌ ?- হ্যাঁ, এবার তুম না বললে আমরা আর শুনব না। দাদা, তোমাকে বিয়ে করতেই হবে। পাত্রী আমার পছন্দ হয়েছে। আমি মনে করি তোমারও পছন্দ হবে...- পাগলামি করিস নাতো, এবার যা, কাপড়গুলো ধুঁয়ে আমাকে রক্ষা কর।- আগে বল- তুমি রাজি?- আচ্ছা তোরা সবাই মিলে আমার পেছনে লাগলি কেন বলত?


বোনের আবদার আর করুণ মুখের চাহনি দেখে সুবির বলেছিল, 'যা ভেবে দেখব, এবার হলত?' চোখে-মুখে অবিশ্বাস নিয়ে ছোট বোন কলপাড়ে চলে গিয়েছিল ঠিক, তবে শেষ রক্ষা হল না রাতে-খাওয়ার সময়। বাবা-মা আর স্বামীকে নিয়ে বড় একটা দল পাকিয়ে পেছনে লেগে গেল ওরা। মা আর বোন কানড়বা-কাটি করে অনুরোধ করায় কিছুক্ষণ মুখে কুলুপ এঁটে চুপ-চাপ বসে থাকল। মুখে খাবারটা তোলা যাচ্ছে না। মা বললেন, 'নিজেকে এভাবে শেষ করে আমাদের মনে আর কষ্ট বাড়িও না বাবা। সারাদিন কষ্ট করে রাতের বেলা বই নিয়ে পড়ে থাক, তোমার পড়া-শুনা হোক আর না হোক তুমি যে ঘুমাতে পার না, অন্তত: কথা বলার জন্য একজন সঙ্গী লাগে-এটা বুঝি। মানুষতো আর সারা জীবন একা থাকতে পারে না। এবার তুমি আর না বলতে পারবে না বাবা।'- তুমি এই সংসারের জন্য তোমার সাধ্যমত করেছ। আমরা সবাই সন্তুষ্ট, তোমার জন্য আমাদের কিছু করতে দাও...- তোমার বাবা ঠিকই বলেছে, আর আমরাইবা কয়দিন বাঁচব, তা ছাড়া সমাজে গেলে তেমন মূল্য পাবে না। এখনই লোকজন আমাদের কথা শোনায়।


বাবা বললেন, 'সুবির, আমি বাবা হয়ে সংসারের জন্য যা করতে পারিনি, তুমি লেখা-পড়া ছেড়ে মাঝপথে সংসারের হাল ধরাতে পরিবার এখন ভালই চলছে। কিন্তু তোমার অবস্থার জন্য আমিই দায়ী ভেবে কষ্ট পাচ্ছি।' সবাই কিছুক্ষণ নিরব থাকার পর নিমা বলল, 'দাদা তুমি একটা কিছু বল...'ঠিক আছে তোমরা পাত্রী দেখ...' বলেই দীর্ঘ-শ্বাস ছাড়ে সুবির। সুবির আপাতত রাজি হয়েছে। কিন্তু এটুকুতেই সবাই আনন্দে আত্মহারা। খাওয়া-দাওয়া, হাসি আনন্দে মনে হল যেন ছোট-খাট একটা বিয়ে অনুষ্ঠান হয়ে গেল। কিন্তু সেদিনথেকে সুবির টেনশনে কোন কিছুতে মন বসাতে পারছিল না।বেশ ক'দিনে অতিরিক্ত কাজ এবং মানষিক চাপে ঠিকমত বিশ্রাম ও ঘুম না হওয়ায় অসুস্থ বোধ করছিল সুবির। রাতের খাবার দিতে দিতে ছোট বোন নিমা বলল, 'দাদা, কাল আমাকে ঔষধ আনতে হবে, আমাকে নিয়ে স্বাস্থ্য-ক্লিনিকে নিয়ে যাবে?'- আমার ভাল লাগছে না। তোর স্বামীকে অথবা মাকে নিয়ে যা-- না দাদা, তোমার স্বাস্থ্যও ভাল যাচ্ছে না, কাল ঐ বিদেশী ডাক্তার চেম্বারে বসবেন। তিনি বলেছেন তোমার রক্ত পরীক্ষা করিয়ে নিতে।- ঠিক আছে, তবে আমাদের অফিস হয়ে যেতে হবে- ভালই হবে, আমিও তোমার অফিসে যাবো। তোমাদের বস খুব ভালো, উনিই তোমাকে ম্যাডিকেল চেক-আপের পরামর্শ দিয়েছেন...।


পরের দিন যথা সময়ে স্বাস্থ্য-ক্লিনিকে পৌঁছে নিমা সুবিরকে বসিয়ে এদিক-ওদিক ছুটা-ছুটি করল। হঠাৎ কী নিয়ে তার ব্যস্ততা বেড়ে গেল সুবির বুঝতে পারছে না; শুধু প্রশড়ববোধক দৃষ্টিতে দেখে আর ভাবে।একসময় নিমা এসে বলল, 'দাদা- ডাক্তার আসতে নাকি একটু দেরী হবে, স্বাস্থ্যকর্মী দিদি বলেছে তোমার ইচ্ছে হলে রক্তটা দিয়ে রাখতে।' ভেবে দেখল, প্রস্তাবটা মন্দ না; তাকে আমাদের সময়টা একটু বাঁচবে। কিন্তু ভয় লাগছে তার, বাড়ির সবাই বিয়ের চাপা-চাপি করছে, এসময় বড় ধরণের কোন অসুখ লেগে যাবে নাতো? ভেতরে ভেতরে আগ্রহ থাকা সত্বেও বিয়ে নিয়ে আর কিছু জানার সাহসও হয়নি সুবিরের। নিমা দাদার হাত ধরে পরীক্ষাগারে ঢুকল। রুমটা বেশ ছিম-চাম, পরিপাটি; সুন্দর করে গোছানো। অ্যাপ্রোন গায়ে দেয়া স্বাস্থ্য-কর্মী মেয়েটি অভিনন্দন জানাল। মেয়েটিকে দেখে সুবিরের মনে হল সে অবিবাহিতা। গায়ের রং মোটামুটি ফর্সা আর মায়াবী চেহারা। সুবির ভাবে তার স্ত্রী হিসাবে এরকম একজন হলেও চলত। ঘোরের মধ্যে যাচ্ছিল সুবির কিন্তু তখনি তাকে অবাক করে দিয়ে মেয়েটি মিষ্টি শান্ত গলায় প্রশড়ব করে, 'দাদার নাম যেন কি...?' থতমত খায় সুবির। উত্তর দিতে দেরী করছে দেখে মজা পাওয়া ছোট্ট মেয়েটির মত নিমা বলে 'ও দাদা, দিদি তোমার নাম জানতে চাচ্ছে....,- তুমি বলে দাও- ও আপনি তাহলে কথা বলতে পারেন?
'সুবির সাংমা' নামটা বলতেই বিনিময়ে মিষ্টি হাসি দিয়ে মেয়েটি বলে, 'ধন্যবাদ'।.


এই মিষ্টি মেয়ের নামটা জানতে পারলে ভাল হত। তবে এখন থাক, আপাতত: মনে মনে তার নাম না জানা মেয়েটির নাম দিয়েছে 'অনামিকা'।. সব কাজ শেষ করে ফেরার পথে যেতে যেতে ছোট বোন নিমার কাছে স্বাস্থ্য-কর্মী মেয়েটির নাম জিজ্ঞেস করতে মন চাইছিল সুবিরের। কিন্তু তখনই নিমা বলে, দাদা- কেমন দেখলে...- কি- মেয়েটিকে- কোন মেয়েটিকে- স্বাস্থ্য-কর্মী মেয়েটিকে। যে মেয়েটি তোমার রক্ত নিলো...- কেন, ভালইতো। বেশ ভদ্র-নম্র বলে মনে হল- আজ এখানে আসার উদ্দেশ্যই হচ্ছে তোমার জন্য এই মেয়েটিকে দেখানো- তা আগে বলবি তো...- আগে বললে তুমি যদি আসতে রাজি না হও, তাই...- কিন্তু মেয়ে কি বিষয়টা জানে?- না, জানে না, তাকেও কিছু জানানো হয়নি। তোমার পছন্দ এবং সম্মতি পেলেই তাকে জানানো হবে।- আচ্ছা, তার নামটা বললি নাতো-- তার নামটা তোমাকে আজ বলব না, পরে বলব।- আচ্ছা আর একদিন দেখি, সম্ভব হলে আমাদের বাড়িতে নিয়ে আয়। আরও একবার দেখি, সেও আমাদের ঘর-বাড়ি দেখে যাক...।


ছোট বোন নিমা আর স্বাস্থ্য ক্লিনিকের কর্মীরা বুদ্ধি করে কমিউনিটি ক্লিনিকে জরুরী রোগীর চিকিৎসার কথা বলে আনল মেয়েটিকে। এসে বললেন, দেরী হওয়ায় রোগী ফিরে গেছে। এলাকায় স্বাস্থ্য কর্মীর আত্মীয় বাড়ির কথা বলে সুবিরের বাড়িতে এসে হাজির। অতি সাধারন ভাবে অথিতি আপ্যায়ণ হল; দুজনের মধ্যে টুক-টাক কথাও হল। কিন্তু তার অনামিকা ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারল না সুবিরের বোন নিমা আর সহকর্মীদের সুন্দর ষড়যন্ত্রের কথা। বিভিনড়ব ধরনের আলাপ-আলোচনা, আনন্দ-ফূর্তিতে একটি দিন কাটল ওদের। আবার দেখা হওয়ার আশ্বাস-বিশ্বাসের মাঝে বিদায় নিল ওরা। ফেরার পথে মেয়েটিকে সঙ্গীরা জিজ্ঞেস করল- সুবিরকে যেভাবে নিমা করেছে। 'কবিতা, কেমন দেখলি...- কিসের দেখা দাদা?- সুবিরকে- কেন?- সুবির এবং তার অভিভাবকদের আমন্ত্রণেই তোমাকে আমরা ওই বাড়ীতে নিয়ে গেছি, বুঝলি...- কি বললে? আমার বিরুদ্ধে তোমাদের এই ষড়যন্ত্র...- কেন সুবির খুবই ভাল ছেলে, তোমার মত সহজ-সরল মেয়ের জন্য ওরকম ছেলেই মানাবে। আর ওই বাড়ি-ঘর আর তাদের পরিবেশ তোমার পছন্দ হয়নি?


মুখে কিছু বলল না কবিতা। মাথা নিচু করে পথ চলতে থাকে। চলতে চলতে সে ভাবে, এই যে চলার পথ আর জীবন চলার পথ; দু'টো দুই জিনিস অথচ কোনটারই শেষ নেই, সমাপ্তি নেই। ছন্দময় জীবন আর সুদীর্ঘ পথ; এই চলার পথে কী কখনো সঙ্গী-বিহীন চলা যায়...।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন