শনিবার, ৩১ মার্চ, ২০১২

Poem- স্বপ্নগর্ভা


স্বপ্নগর্ভা
-ফিডেল ডি সাংমা

সবুজ পাতা ঝরে- হয়ে যায় মেঘ,
মায়া বৃন্তহীণ নিরবে উড়ে-
ঠিকানাবিহীণ; আকাশ জুড়ে।

সাদা মেঘের কাছে কালোর নাটাই
কালোর মেঘের নাটাই আলোর কাছে,
মিথুন রাশির মেঘ- যার ইচ্ছে-চুম্বনগুলো
আলিঙ্গন-শৃঙ্গারে বৃষ্টি হয়ে গেছে।

ফুটেছিলো যার স্পর্শে-প্রেমের মুকুল
ভেসেছিলো সুখ- তার সবুজ শালবনে,
তখনো ব্যস্ত কিষাণী স্বপ্ন চাষে
লুটোপুটি আবেগে-উচ্ছ্বাসে; স্বপ্নের প্লাবনে।

আজ স্বপ্ন আগুণ পিপাসু, মানি বা না মানি
যার ধারে; ভারে- নিসঙ্গ আঁধার যাত্রী
সেদিনের স্বপ্নগর্ভা কিশোরী- প্রেম কিষাণী।

সোমবার, ২৬ মার্চ, ২০১২

Poem- প্রতিদান

প্রতিদান... ফিডেল ডি সাংমা

অনুরোধে; অনুভবে কোনদিন টের পাইনি
হৃদয়ের গভীরে তোমার জন্য
ছাদ ফোরা আলোর মতন
কোন বিন্দু, স্বপ্ন; অথবা ভালোবাসা।
বিন্দু বিন্দু বিষাদ- প্রায়শঃ অনুকম্পায়;
বলেছি নিঃসংকোচে- 'ভালোবাসি'।
সময় গড়ায়; ঝরায় অশ্রু সরোবর
আকন্ঠ ভালোবেসে তৃষ্ণায় হাত বাড়ালে
ও বললে,
আজ বিদায়ের ক্ষণ, বৈরাগ্যে রবি অস্তাচল
তোমার বিন্দুতে, গড়েছি আকাশ, সিন্ধু
আমি সিক্ত- কেবল তুমিই আজ রিক্ত
পরলোকে সুখে থেকো; এইলোকে আসি...।
 

বৃহস্পতিবার, ২২ মার্চ, ২০১২

Poem- রমন যন্ত্রণা


রমন যন্ত্রণা

ফিডেল ডি সাংমা

ধীরে চলো, ভীড়ে উর্ধ্বমুখী
ধরো শক্ত হাতে- বাড়াই হাত- আঁধার রাতে
পেছালে- হারালে- পোড়ামুখী।

অনির্বাণ অশ্রু ভাদর- মাকড়সা উদর
মেনেছো; মরণ মন্ত্রণা !
উপচে জোয়ার- স্বপ্নে বিভোর- আকাশ ছোঁয়ার
কুঁড়াও রমণ; যন্ত্রণা।

Poem- রঙ্গীন


রঙ্গীন
ফিডেল ডি সাংমা
লাল মানেই সিঁদুর নয়; অথচ সিঁদুর মানেই লাল
গোলাপ মানেই গোলাপী নয় শুধু; আবিরও।
ভালোবাসার রঙ নেই; তবু সীমাহীণ রঙ্গিন, স্বপ্নময়
যে চোখেই দেখো, ভালোবাসা ও আমি পাশাপাশি
গোলাপের মতো লাল, নীল বাহারী রঙেই ফুটি।
ভালোবাসার কোন মাপকাঠি নেই, নেই পরিসীমায়
ভালোবাসা অনুভব, উপভোগ, মহিমা ও ত্যাগের
যার কোন বর্ণ নেই, তবু স্নিগ্ধ, বর্ণিল সপ্নময়।
তুমি- নিত্য হোলীর রঙে রঙ্গীন করো বিশ্বময়
অন্তর ভরিয়ে দাও ভালোবাসা কানায় কানায়।
আজ স্বপ্নীল ভালোবাসায় আমিও রঙ্গীণ- স্বপ্নময়
সেখানে সিঁদুর আবিরের রঙ নেহায়েত; প্রতীক।
রণাঙ্গনে ফিডেল ডি সাংমা
(বাবুল নকরেক @ মেঘ রোদ্দুরকে)
অস্থির অল্েয দিবানিশি; স্বপ্নের জাবড়কাঁটা
ফোসকা পড়া হৃদয় অমলিন- জ্বলন্ত লৌহ শিখা
ঝরাও নিরবে অশ্রু বৃষ্টি; অখন্ডিত বিধান লিখা।
রণাঙ্গনে বুঝি বিকিকিনি হয় নি কোন সুখ
অন্তহীণ বৃথা প্রতীা, নির্বাক; নিশ্চল কার তরে
শোন, কুসুম কলি কখনো ভাঙ্গে না ভ্রমর ভারে।
যেন সাপের মুখে অদীতি স্তব্ধ ব্যাঙের ছানা,
আজ বুঝি মাঘের শীত ঝেঁকেছে তোমার গায়-
ওই খরায়; ভরা শ্রাবণের অঝর বৃষ্টির ধারায়।

Poem- সেই ছবি


সেই ছবি
ফিডেল ডি সাংমা

কবিতার চলনে-বলনে ছন্দের দ্বন্দ্ব বলে কবির-ই কী দোষ বল
কাঁটে না আঁধার; কবিতার ভেতর কষ্ট-ঝর্ণা ধারা- অশ্রু ছলছল।
অসীম আকাশ জুড়ে আছে নিকষ কালো- সহস্র কষ্টের মেঘমালা
ভালোবাসার না বাসার, পাওয়ার না পাওয়ার; চিত্তে অনির্বান জ্বালা
ছোপছোপ দুঃখ-বিষাদ যেন উদ্ধত সমূদ্র ঢেউ- রন্ধ্রে রন্ধ্রে মিশে
কবিতা জানে না, কোন হাওয়ায় জ্বালা জুড়ায়- নিবৃতে নিমেষে।
পথ-ঘাট, নদী-প্রান্তর জানে, কবিতার ত দেহের শত দুঃখগুলো
হতাশার জোয়ারে ভাসে প্রতীার তরী শুধু; স্বপ্নগুলো এলোমেলো।
আমার কবিতায় বর্ণে ও প্রেমে সত্য স্ব্যা অমর- সেই কবিতার
অশ্রু মেখে বৃথা কষ্ট মুছামুছি- প্রেম হয় নাতো ম্লান সেই ছবিটার।

Poem- কালরাত্তির


কালরাত্তির
ফিডেল ডি সাংমা

স্বপ্নভাঙ্গা রাত্তির জেগে স্তব্ধ কবি
নিমেষে ফসকে গেলো ঝকঝকে ছোছনা
এখন জড়িয়ে- মুড়িয়ে থাকে কষ্ট-কাঁথায়।
ধূসর ভবন, আঁধার কাটে না কবির
এলোপাথারি টেবিল আর কাগজ-কলম
চির অনড় হাতের আঙ্গুল- মুষ্ঠিবদ্ধ
ডাহুক যাচ্ছেতাই ডাকে- কালরাত্তিরে।
দুর্লঙ্ঘ শঙ্কা অযাচিত আবির্ভাব
অবিনশ্বর সহস্র কাঞ্চন কালি, দুঃখ মাতাল
নিবু চোখে একাকী কবি কালরাত্তির জাগে
শর্তবিহীণ, স্বপ্ন জোড়ার; গড়ার আশায়...

Poem- পথ


পথ
রনি থ্রী ডি'কে-  ফিডেল ডি সাংমা

আত্মভোলা; নিজেই কি জানে
নূঁড়ি বয়ে একেবেঁকে বেশ
কোথায় নিয়েছে মোড়; কার টানে
তার কোথায় ঠিকানা শেষ।

পথের বেলায় পল্লী-বাউল সঙ্গে রাখি
কান্তির গায়ে- যার মাতাল সুর মাখি।

আহ্‌ ভোরের পাখি মিষ্টি হাওয়া দেখো-
স্বপ্ন হৃদয় পাতা পথের 'পর,
যাহ্‌ আত্মভোলা পথ- এবার চিনে রেখো
প্রেমের পথে চলছে প্রেমিকবর।

রবিবার, ৪ মার্চ, ২০১২

Poem- বিবর্ণ সবুজের হাহাকার


বিবর্ণ সবুজের হাহাকার
ফিডেল ডি সাংমা

নির্মল কুড়ির চির সবুজ বৃ হবার সাধ
বাঁচার একমাত্র সম্বলই ছিলো আশা-
শাখার হাওয়ায় পাখিদের প্রনয়ালাপ শোনার
নতুন সূর্য্যের আভায় গোপন নকশীকাঁথা
ছিলো- তমসায় জোছনা নন্দন।
খরা-দুপুর রৌদ্রে ফোসকা পড়ে চৈত্রের গা
আর ছিলো মৃত্যু দুয়ার খোলা।
সবুজের শেষ আশা তবু-
গায়ে ফোসকা পড়েও
যদি কখনো পাতাবাহার হওয়া যায়।
তারপর- সবুজ পাতাবাহারের বাহারি রঙ
পেয়েছিলো ঠিকই...

Poem- নারীও মানুষ


নারীও মানুষ
(আমার কন্যা চিংআ'র উদ্দেশ্যে)
ফিডেল ডি সাংমা

প্রকৃতি তোমায় মেয়ে করেছে বলেই- তুমি নারী
তুমিও পারবে মানুষ হলে, আমি যা পারি
নারীও মানুষ। তাই মানুষ হও; শুধু মেয়ে হয়ে নয়-
পৃথিবী অপরূপ অথচ দুর্বোধ্য; করতে হবে জয়
তাই পথ চলতে হয়- গুনে গুনে, বুঝে শুনে
ওৎ পেতে অনাকাঙ্খিত বাঁধা- থাকে যেখানে।

এখোন মানুষের হীন স্বার্থের মোহে দিকবিদিক ছুটোছুটি
সুস্বপ্নের পানে উড়তে উড়তে কান্তির ভারে কখনো যদি
পড়ে যাও আঁধার, অকূল পাথারে, বিপদ শঙ্কুলে
তোমার শক্তিকে যদি করে অপমান- সরলা, অবলা বলে
স্ব-মহিমায় মহিয়সী হও, মাথা তুলো দাঁড়িয়ে
তাই- মেয়ে হয়েই নয়, বড় হও মানুষ হয়ে।।

মানুষ পৃথিবীকে বশে রাখতে চায়, আর নারীকে ঘরে
নারী মা, বোন, বঁধু, গৃহলী বলে- ঘরে বন্দি করে
সমাজ তোমাকে যদি রাখতে চায় বিন্দু বাসিনী রূপে
সততায়, সাহসে, দামিনী, নাশিনি হতে পারে নারীও
বলে-কৌশলে নারীও মানুষ, প্রসবিনী মা'র শক্তি দেখিও।

তোমার স্নিগ্ধ-কোমল, স্নেহ আর ভালবাসাও দেখিও তবে
নারীর সাহসে, কর্ম-শক্তিতে বিশ্ব যেদিন প্রকম্পিত হবে।

Poem- যিহুদার মতো মৃত্যুকে


যিহুদার মতো মৃত্যুকে
ফিডেল ডি সাংমা

তোমার নিত্যসঙ্গী হয়েও হারিয়েছিলো শিষ্যেরা তোমাতে বিশ্বাস
তবু আমার ভেতরের বিশ্বাসহীনতাই শুধু দেখছো কেনো প্রভু-
নিত্য শমরীয় নারীর মতো পাপের গহীন কুয়োর পাশে আমিতো
শুণ্য হৃদয় নিয়ে এখনো- তোমার জীবন্ত জলের প্রতিায় থাকি।

তোমার সাতে কী সম্পদ অর্জন করেছিলো যিহুদা ইস্কারিয়ত
গোটা কয় রৌপমুদ্রা; অথচ শত্রুর হাতে তোমাকে দিলো ধরিয়ে
হে প্রভু, ভালোবাসার ছলে- আমি কি নিত্য তোমায় চুম্বন করি
বিধর্মীদের কাছে কত পাপমুদ্রার বিনিময়ে তোমাকে বিক্রি করি।
তবে আমি কি থোমার বিশ্বস্ত বংশধর...., তোমার শিষ্য নই..?

তুমিতো জানো, স্বসম্পত্তির অর্ধেক দিলেও মন ভরে না দুঃখীর
মথি, সক্কেয়র মতো আমিতো করগ্রাহক কিংবা ছিনতাইকারী নই,
প্রভু, আমি মিতব্যয়ী বলেই কি- তোমার চোখে আমার কৃপনতা।
জানোইতো সেদিন মুমূর্ষ রোগীর চিকিৎসার যে টাকাটা দিলাম
ও টাকা দিয়ে বংশধরের কতজনের কবরের জমি কেনা যেতো
সমাজ সাী! সম্পদের মোহ সবারই আছে, এই আমারই মতো।

কোন গীর্জাই বাদ যায়নি আমার, আমাকেই আত্ম-প্রবঞ্ঝক বললে
ধর্মের কথা বলেছি যাদুময়-উচ্চস্বরে এই বাইবেল বুকে চেঁপে
অবিশ্বাসীদের দলে সবাই মাতাল, আকন্ঠ নিমজ্জিত ছিলো পাপে
কত মানুষের বিশ্বাস ফেরালাম; অথচ আমার অবিশ্বাসটাই দেখলে।
শিমন পিতরের মতো সন্তান-সম্পদহীন হলে তোমাকে কোনদিনও
প্রভু, আমি কি অস্বীকার করতাম- অন্তত তোমাকে, চেনার পরও..।

তোমার পুনরুত্থান নিয়েও অবিশ্বাস করলো থোমা, আমিও!
তবে আমি কি থোমার বিশ্বস্ত বংশধর, তোমার শিষ্য নই..?
প্রতিদিন আমি যিহুদার মতো মৃত্যুর বুকে আলিঙ্গন করি
প্রভু, পদে পদে; ভালোবাসার ছলে- তোমাকে চুম্বন করি
আমি কেনো হবো শুধু মহাপাপীর বংশধর, প্রভু- শিষ্য তোমার নই?
জ্ঞানপাপীকে দয়া করো, নিত্য আমি- চোখের জলে বাপ্তাইজিত হই...।

Poem- আমি ভালোবাসা চাই



আমি ভালোবাসা চাই

ফিডেল ডি সাংমা

অমূল্য ভালোবাসা- পবিত্র ভালোবাসা
জীবনের জন্য চির-মধুর ভালোবাসা।

আমি ভালোবাসা চাই- যাকে ভালোবাসা যায়
ভালোবাসা ছাড়া পৃথিবীতে বেঁচে থাকা দায়,
সবাইতো ভালোবাসে, ভালোবাসার কাঙ্গাল
কেনো তবে খোলে না; আমার এ কপাল।
আমি কি তবে ভালোবাসা কি না জেনে
অবহেলায় দিয়েছি ফিরিয়ে- অকারণে।

আফসোস সীমাহীন, জীবনের আর কটাদিন
যেটুকু দিয়েছি, আর পেয়েছিও ভালোবাসা
মৃত্যর পর তা সবই পড়ে রবে- ধূলায় মলিন।

আমি ভালোবাসা চাই- যাকে ভালোবাসা যায়
হৃদয়ে-হৃদয়ে অমর রবে নিঃস্বার্থ ভালোবাসায়।
.

Chora-অব্যক্ত


মিষ্টি এ বিকেল বেলায়
এলে না কোন হেলায়,
অব্যক্ত হৃদয়ের কষ্টগুলো
সুপ্ত হয়ে রয়ে গেলো...

Poem- আলো


আলো

ক্যামোন ছিলি আলো গাঢ় আধাঁর করে
বহুদিন পর তোর ঝিলিমিলি রাঙা পায়ের ছোয়াঁয়
রাঙিয়ে দিলি কালোয় ঢাকা ভূবন জুড়ে
ভালোবাসতে গিয়েছিলাম ভুলে
স্নেহ আদর বঞ্চিত শিশুর বেড়ে ওঠার মতো অর্ধমানব
ভালোবাসার হৃদয় এখনো আছে হারাতাম আরেকটু হলে
একটু একটু করে দূরে সরে যাচ্ছে ভয়- ধরেছি হাল
প্রতিদিন উঠোন জুড়ে বাতাস মেলবে ডানা
তুই থাকিস চিরকাল, আমারই হবি- চোখের আলো
থাকতেই হবে-যতদিন বেঁচে থাকি নইলে
আড়ি! হৃদয়ে মিশে থাক- তুই যতদিন থাকবি,
আমিও থাকবো ভালো।

শুক্রবার, ২ মার্চ, ২০১২

Poem- স্থবির


স্থবির
ফিডেল ডি সাংমা
কারো জীবন থেমে তো থাকে না, চলছে
আমৃত্যু; সকলে- সম্মুখের পথ ধরে
চলতেই থাকে, এক মাত্র আমি আছি,
পিছিয়ে; আগের মতো একই জায়গায়
তোমাদের এগিয়ে যাওয়ার পথ ধরে
আমার নিরন্তর তাকিয়ে থাকা
স্থবির অই পাহাড় চূড়ায়; অবহেলায়

Poem- রমন যন্ত্রণা


রমন যন্ত্রণা
ফিডেল ডি সাংমা

ধীরে চলো, ভীড়ে উর্ধ্বমুখী
ধরো শক্ত হাতে- বাড়াই হাত- আঁধার রাতে
পেছালে- হারালে- পোড়ামুখী।

অনির্বাণ অশ্রু ভাদর- মাকড়সা উদর
মেনেছো; মরণ মন্ত্রণা !
উপচে জোয়ার- স্বপ্নে বিভোর- আকাশ ছোঁয়ার
কুঁড়াও রমণ; যন্ত্রণা।

Poem- পুনশ্চঃ


পুনশ্চঃ
ফিডেল ডি সাংমা

কেনো বারবার মনে পড়ো তুমি;
আমি তা চাইও না- দিব্যি বলছি
প্রথম দেখায় ছুঁইয়েছিলে আকাশ খুবই।
একদিন গেয়েছিলে, "একটা গান লিখো..."
আর বললে, কবি প্রেম নিয়ে কবিতা...।
ভালোবাসার কাল ছিলো না তোমার
যা পেয়েছি; সবই আকাল- উপাধি।
অজস্র সূর্যোদয় হলো- সূর্যাস্ত গেলো
প্রেমের কবিতা লেখা হলো না আমার
তাই, বেদনা দিয়ে তোমার গল্প লিখলাম...